« »

Saturday, September 18, 2010

বাংলা প্যানগ্রাম : এক বাক্যে সব হরফ

বর্ষামুখর দিন শেষে, ঊর্দ্ধপানে চেয়ে যখন আষাঢ়ে গল্প শোনাতে বসে ওসমান ভুঁইঞা, ঈষান কোণে তখন অন্ধকার মেঘের আড়ম্বর, সবুজে ঋদ্ধ বনভূমির নির্জনতা চিরে থেকে থেকে ঐরাবতের ডাক, মাটির উপর শুকনো পাতা ঝরে পড়ে ঔদাসীন্যে, এবং তারই ফাঁকে জমে থাকা ঢের পুরোনো গভীর দুঃখ হঠাৎ যেন বৃষ্টিতে ধুয়ে মুছে ধূসর জীবনে রঙধনু এনে দেয়।
বাংলা বর্ণমালার সব হরফ অন্তত একবার থাকে, এমন বাক্য, ফন্ট বা কিবোর্ড ঠিক আছে কিনা, তা পরখ করতে কাজে লাগে প্যানগ্রাম। কিবোর্ডে টাইপ করে দেখুন দীর্ঘ বাক্যটি, আঙুলের সাথে মোলাকাত হয়ে যাবে সব বাংলা বর্ণের।
প্যানগ্রাম-এর বাংলা পরিশব্দ কী? আপাতত নাম দেয়া যাক, সব বর্ণঅলা বাক্য। বাংলায় এমন বাক্য বা অনুচ্ছেদ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। ইংরেজিতে আছে অনেক। বেশ প্রচলিত একটা :

প্যানগ্রাম যত ছোট হয়, তত সুবিধা। মানুষের ডাকনাম, শব্দসংক্ষেপ, এক বর্ণ একাধিকবার না ব্যবহার করে প্যানগ্রাম বানানো আরও চ্যালেঞ্জের কাজ। বাংলায় এমন প্রচেষ্টা দেখা যায় মনোজকুমার মিত্রের লেখায়, খটমটে যদিও :
বিষণ্ণ ঔদাসীন্যে ঊষাবৌদি বাংলাভাষায় প্রচলিত নিখুঁত গল্পটি অর্ধেক বলতেই ঋতু ভুঁইঞা আর ঐন্দ্রিলা হৈহৈ করে উঠল-- ওঃ, থামো বুঝেছি বড্‌ডো পুরাণো ঢঙের গল্প-- মূঢ় আড়ম্বর ও আত্মশ্লাঘার ফল জীবনে বিঘ্ন ও বৃহৎ ক্ষতি-- এ নীতি যার না?
এ প্যানগ্রাম পাওয়া গেছে 'প্রসঙ্গ বাংলাভাষা' বইয়ে, 'বাংলা ইঞ্জিনিয়ারিং বর্ণমালা' প্রবন্ধে। বইটি ছাপা হয় ১৯৯৩ সালে, পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি, কলকাতা থেকে (সূত্র)। অবশ্য মনোজকুমারও তিনটি নাম ব্যবহার করেছেন : ঊষা, ঋতু ভুঁইঞা এবং ঐন্দ্রিলা।

সাধু রীতিতে লেখা প্যানগ্রাম পেয়েছি :
আকবর ঊষাকালে বৃহৎ‍ ঐরাবতে দিল্লীর অর্ধেক প্রদক্ষিণ করতঃ হঠাৎ‍ স্বগোতক্তি করিলেন, এই ঢোল‌ পাখোয়াজ সঙ্গীত আর সৌরভমন্দ্রিত আড়ম্বরপূর্ণ রঙিন জীবনের ছত্রতলে যে বিষণ্ণ দারিদ্র তাহা কি মোগল সাম্রাজ্যের ঈষৎ‍ ঔদাসীন্য, প্রচলিত বৈদেশিক নীতি নাকি বারোভুঁইঞার সহিত পুরানো এবং আত্মঘাতী যুদ্ধের ফসল?
ঢ়,ড,ঝ ইত্যাদি বর্ণ অনুপস্থিত বাক্যে; লিপোগ্রাম হয়ে গেছে। লিপোগ্রাম হলো প্যানগ্রামের উল্টো, ইচ্ছে করে কোনো বর্ণ বাদ দেয়া হয় বাক্যে বা অনুচ্ছেদে। যেমন, নিচের অনুচ্ছেদে ইংরেজি e বর্ণটি গায়েব :
This is an unusual paragraph. I'm curious how quickly you can find out what is so unusual about it. It looks so plain you would think nothing was wrong with it! In fact, nothing is wrong with it! It is unusual though. Study it, and think about it, but you still may not find anything odd. But if you work at it a bit, you might find out! Try to do so without any coaching!

0 টি মন্তব্য:

Post a Comment

 
Design by Free WordPress Themes | Bloggerized by Lasantha - Premium Blogger Themes | Best WordPress Themes